প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না দেওয়ায় আশাহত বিএনপি

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা না দেওয়ায় আশাহত বিএনপি

জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে নির্বাচনের রূপরেখা না দেওয়ায় আশাহত হয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সোমবার, ১১ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "গতকাল (রোববার) আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ১০০ দিনের পূর্তিতে একটি ভাষণ দিয়েছেন। এতে অনেকেই আশান্বিত হয়েছেন, তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে একটু আশাহত। আমি আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা তাঁর প্রজ্ঞার সাথে দেশের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নির্বাচনের জন্য একটি রূপরেখা দেবেন, যা আমাদের পরিস্থিতির উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে।"

তিনি বলেন, “আমি বারবার নির্বাচন কেন বলছি? কারণ, নির্বাচন হলে দেশের অর্ধেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিএনপি ক্ষমতায় আসুক বা না আসুক, সেটা বিষয় নয়। আমাদের চিন্তা হচ্ছে, যেসব শক্তি দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাচ্ছে এবং সংঘাত সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, তাদেরকে নির্বাচনের রূপরেখা দিলে তারা পিছিয়ে যাবে। কারণ, ওই সরকারের পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে।”

সংস্কারের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, "সংস্কার আমরা শুধু চাই না, বরং আমরা এটি শুরু করেছি। আমি অনুরোধ জানাই, সেভাবে এগিয়ে যান যাতে এটি সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য হয়। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো বাধার সৃষ্টি করিনি, বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাদের সমর্থন দিচ্ছি। তবে, সচিবালয়ে যারা স্বৈরাচারের দোসর, তারা তো এখনো বসে আছেন। আপনি তাঁদের নিয়ে কীভাবে কাজ করবেন?"

প্রশাসনের দুর্নীতির বিষয়েও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, "আপনি সংস্কার করবেন, কিন্তু যারা প্রশাসনে বসে আছেন, তারা বেশিরভাগই স্বৈরাচারের দোসর। তারা কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন, দুর্নীতি করেছেন, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এগুলো দৃশ্যমান করা দরকার। গভর্ন্যান্সের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে মানুষ শান্তি পায় এবং দেশ সঠিকভাবে শাসিত হয়।"

বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ফখরুল বলেন, “জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে, তাতে মানুষ শান্তি পাচ্ছে না। কিন্তু মানুষ মেনে নিচ্ছে, কারণ তারা বিশ্বাস করে যে একটা সুন্দর নির্বাচন হবে। কাজেই, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিন। বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেন বা না পারেন, চেষ্টা করুন। কিন্তু সচিবালয়ে যদি ঘুষ দিতে হয়, সেখানে দালালরা যদি ঘুরে বেড়ায়, মানুষ তা কখনো ভালোভাবে গ্রহণ করবে না।”

বিএনপির মহাসচিব আশা প্রকাশ করে বলেন, "আমি বিশ্বাস করি, এ সরকার পারবে, বাংলাদেশের মানুষ পারবে এবং তরুণেরা পারবে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে।"

আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু সভাপতিত্ব করেন। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, হেলেন জেরিন খান, আসাদুল করিম এবং নাজমুল হক প্রমুখ।